Showing posts with label বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি. Show all posts
Showing posts with label বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি. Show all posts

Thursday, March 5, 2015

পৃথিবী ও আমরা আর আমাদের নির্মম অত্যাচার [MB Reza]

আমাদের স্বাদের পৃথিবীটা আমাদের জন্য অনেক সুখকর হলেও প্রান ধারনের জন্য সে কিন্তু মাঝে মাঝেই অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে রেগে উঠে। তাই গত ৫০ কোটি বছরের মধ্যে আমরা অনেক গনবিলুপ্তি দেখতে পাই। গনবিলুপ্তি সম্পর্কে কিছু বলা যাক। যদি ২০ লক্ষ বছরের মধ্যে পৃথিবীর ৭৫ ভাগ প্রাণী যদি বিলুপ্তি হয়ে যায় তবে তাকে গনবিলুপ্তি বলে।
গত ৫০ কোটি বছরের মহামৃত্যু গুলো উল্লেখ করা হলঃ
# ৪৫ কোটি বছর আগেকার অরডোভিশিয়ান যুগের গনবিলুপ্তি।
# ৩৫.৯ কোটি বছর আগেকার ডেভোনিয়ান যুগের গনবিলুপ্তি।
# ২৫.১ কোটি বছর আগেকার পারমিয়ান যুগের গনবিলুপ্তি।
# ২০ কোটি বছর আগেকার ট্রিসায়িক যুগের গনবিলুপ্তি।
# ৬.৫ কোটি বছর আগেকার ক্রেটোশিয়াস যুগের গনবিলুপ্তি।
এসবের মধ্যে ২৫.১ কোটি বছর আগেকার পারমিয়ান যুগের গনবিলুপ্তি ছিল সবথেকে ভয়ঙ্কর। তখন প্রায় ৯৮ ভাগ প্রেনী বিলুপ্তি হয়ে গিয়েছিল। এভাবে একটা গড় হিসাব করে দেখা যায় যে প্রতি ৬ কোটি বছর পর এমন বিলুপ্তি হয়ে থাকে। সে হিসাব মতে আগামী কয়েক লক্ষ বছরের মধ্যেই এমন একটা গনবিলুপ্তি হয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাতে মানুষের বিলুপ্ত হয়ার সম্ভাবনাই সবথেকে বেশি। তাই আমাদেরকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। উন্নত করতে হবে প্রযুক্তি আর নিজেদের অভিযোজন ক্ষমতা।
আমরা এসব ধ্বংসের মধ্যে অনেক সভ্যতাকে দেখতে পাই। যারা নিজেদের কারনেই ধ্বংস হয়ে গেছে। যেমনঃ রোমান সভ্যতা এর মধ্যে অন্যতম। তাছাড়া স্টার দ্বীপের কথাও আমরা জানি। তারা পাথরের মূর্তি বানাতে উন্মত্ত হয়ে গিয়েছিল, নিজেদের ধ্বংসের কথা খেয়ালই করে নি। আজ আমরাও ঐ একইদিকে অগ্রসর হচ্ছি। হয়ত আমরা আমাদের প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে আরো কিছুদিন তিকে থাকতে পাড়ব। কিন্তু পরাজয় কিন্তু নিশ্চিত। তাছাড়া আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যাচ্ছি একটা পোড়া, নোংরা ও বসবাসের অযোগ্য গ্রহ। তারা কিন্তু আমাদের খুব শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে না। তাদের মনে থাকবে শুধু আমাদের জন্য ঘৃণা। আর মাত্র কয়েক হাজার বছরের মদ্ধেই আসছে একটা বড় তুষারযুগ। তাছাড়া কয়েক শতাব্দির মধ্যেই ছোটখাট একটা তুষারযুগ হয়ে যাবে। তো এখনই কিন্তু সময় সচেতন হওয়ার। তাহলে আসুন সবাই মিলে পৃথিবীটাকে সুন্দর করার জন্য কাজ করি আর সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি।

ফিজিক্স বা পদার্থবিজ্ঞানের কিছু অমীমাংসিত রহস্য!

পদার্থবিজ্ঞানীরা সব সময়ই চেষ্টা করে আসছেন এই মহাবিশ্ব আর ভেতরে থাকা যাবতীয় বস্তু কিংবা পদার্থের রহস্য ভেদ করতে। কিন্তু কিছু জায়গায় এসে পদার্থবিজ্ঞান মহাশয়কেও এসে মাথা চুলকোতে হচ্ছে।
কারণ এই বিষয়গুলোর কোন সর্বজন গ্রহণযোগ ব্যাখ্যা নেই। চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলোর কয়েকটি-

১) কৃষ্ণ বস্তু

এই বিশাল মহাবিশ্বের শতকরা চুরাশি ভাগ বস্তু কোন ধরণের আলো শোষণ কিংবা নিঃসরণ করে না। পদার্থ বিজ্ঞানে কৃষ্ণ বস্তু বলে একটি শব্দ আছে। যদিও এখন পর্যন্ত সরাসরি এর কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি। এমনকি পরোক্ষভাবেও এর অস্তিত্বের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। শুধু দৃশ্যমান পদার্থের উপর এর অভিকর্ষজ বল, তেজস্ক্রিয়তা কিংবা মহাবিশ্বের উপর এর প্রভাব অনুমান কিংবা উপলব্ধি করা যায়। একারণে কৃষ্ণ বস্তুকে অনেকে আমাদের ছায়াপথের বাইরে থেকে আগত “ছায়া-বস্তু” নামেও অভিহিত করেন। এখন পর্যন্ত কৃষ্ণ বস্তুর বাস্তব অবস্থান নির্ণয়ের অনেক চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু সফলতা আসে নি।

২) আমাদের মহাবিশ্বের সমান্তরাল মহাবিশ্ব

জ্যোতির্পদার্থবিদ্যাতে অনুমান করা হয়, আমাদের এই মহাবিশ্বের অনুরূপ আরো অনেক মহাবিশ্ব আছে। যাদের প্রতিটি বস্তুকণা আমাদের মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণার অনুরূপ। হোক তা জীব কিংবা জড়। পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন জটিল তথ্য ও তত্ত্ব আমাদের সামনে এই কথাটিই তুলে ধরছে। যদিও বিজ্ঞানীরা এখনো এই বিষয়ের বাস্তব প্রমাণ পাবার ক্ষেত্রে অনেক দূরে অবস্থান করছেন।

৩) এই মহাবিশ্বের ভবিষ্যত কি?

এই মহাবিশ্বের ভাগ্য সম্পূর্ণরূপে জড়িয়ে আছে Ω ফ্যাক্টরের উপর। এই মহাবিশ্বের সব বস্তুর ঘনত্ব ও শক্তি এই অজানা Ω ফ্যাক্টর দিয়ে বোঝানো হয়। যদি কখনো এই ফ্যাক্টর Ω এর মান ‘এক’ এর চেয়ে বেশি হয় তবে ধরে নেয়া হয়, এই মহাবিশ্ব আর সম্প্রসারিত হবে না। বরং এর সঙ্কোচন শুরু হবে এবং এক সময় পুরো মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। এই অবস্থার নাম দেয়া হয়েছে “Big crunch”।
যদি এই Ω এর মান হয় ‘এক’ এর চেয়ে কম তবে এই মহাবিশ্বের তীব্র সম্প্রসারণ গতির জন্য যাবতীয় ছায়াপথ ও নক্ষত্র ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এরপর সব বস্তু হয়ে যাবে একদম শীতল, নিশ্চল। এরপরের মহাবিশ্বের ত্বরণ বা গতিবেগ এতো দ্রুত গতিতে হবে যে এর মাঝে থাকা সব পদার্থের পরমাণুগুলোর মধ্যে বিদ্যমান বন্ধন ভেঙ্গে যাবে। ফলে এই মহাবিশ্বের সব পদার্থ দুমড়ে-মুচড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।

যদিও এই Ω ফ্যাক্টরের মতো পুরো বিষয়টিই এখন পর্যন্ত হাইপোথিসিস কিংবা ধরে নেয়া হয়েছে।

৪) প্রতি-পদার্থের চেয়ে পদার্থের সংখ্যা বেশি কেন

পদার্থবিজ্ঞানে পদার্থ-প্রতি প্রদার্থ (matter-anti matter) বলে দুটি ধারণা আছে। সব পদার্থেরই প্রতি পদার্থ আছে বলে ধরে নেয়া হয়। একটি পদার্থ যে আধান বা চার্জযুক্ত হয়, কিংবা এর ভেতরে থাকা ইলেক্ট্রন যে অভিমুখে ঘুরে; সেটির প্রতি-পদার্থ হয় তার ঠিক বিপরীত। প্রশ্ন হলো এই মহাবিশ্বে প্রতি পদার্থের চেয়ে পদার্থের সংখ্যা বেশি কেন? অনেকের মতে, বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে মহাবিশ্ব সৃষ্টির পর সমান সংখ্যক পদার্থ ও প্রতি-পদার্থ তৈরি হবার কথা। কিন্তু এরকম হলে তা হতো ভয়াবহ। কারণ প্রোটন এন্টি-প্রোটনের সংস্পর্শে এসে ধ্বংস হয়ে যেত। এভাবে পদার্থের ইলেক্ট্রন, নিউট্রনসহ অন্যান্য কণাগুলো প্রতি-পদার্থে থাকা এন্টি-ইলেক্ট্রন কিংবা এন্টি-নিউট্রনের সংস্পর্শে এসে ধ্বংস হয়ে যেত। এরকম হলে এই মহাবিশ্বের টিকে থাকাই অসম্ভব হয়ে যেত। তাই ধরে নেয়া হয়, মহাবিশ্বে পদার্থের সংখ্যা বেশি, প্রতি-পদার্থের সংখ্যা কম। যে কারণে এই মহাবিশ্ব এখনো বহাল তবিয়তে টিকে আছে।

যদিও এই ব্যপারে পদার্থবিজ্ঞানীরা একমত হতে পারেন নি এখনো।
যদি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে দয়া করে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এ শেয়ার করুন এবং অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিন। 

আপনার মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করছে যেই জিনিসগুলি!

মানবদেহের সকল অঙ্গই মস্তিষ্কের ওপর নির্ভরশীল। মস্তিষ্ক থেকে সংকেত দেয় বলেই ঠিকঠাক মতো কাজ করে দেহের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। আর তাই মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখা খুবই জরুরি। আর এর জন্য চাই বিশেষ যত্নের ও সাবধানতার।

যে ৮টি ভুলে প্রতিদিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আপনার মস্তিষ্ক আসুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলোঃ
অপর্যাপ্ত ঘুম
—————
যেকোনো মানুষেরই পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। এতে কম বয়সেই স্মৃতিশক্তি কমে যায়, দেখা দেয় নানা সমস্যা।
মাথা ঢেকে ঘুমানো
——————-
আমরা অনেকেই ঘুমানোর সময় চাদর দিয়ে মাথা ঢেকে ঘুমাই। এতে চাদরের নিচের বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়।
কথা বেশি বলা, কম বলা
———————–
অনেকেই আছেন যারা কথা বলেন খুব কম। যারা কথা বলেন কম, তারা এখন থেকে আরেকটু বেশি কথা বলুন। কারণ কম কথা বললে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। তবে যারা মোবাইল ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলেন- তাদের মস্তিষ্কের ভবিষ্যৎ মারাত্মক। ক্ষতিকারক রেডিয়েশনের প্রভাব তো আছেই, বরং কাজে অনিহা বাড়াতে মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত কথোপকথন বিশেষভাবে কাজ করে।
অসুস্থ শরীরে অতিরিক্ত কাজ
————————
অনেকেই অসুস্থ শরীরে অতিরিক্ত কাজ করেন থাকেন। অসুখ নিয়ে পড়াশোনা করা কিংবা মস্তিষ্কে চাপ তৈরি করে এমন কাজ করলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। তাই অসুস্থতার সময় কাজ না করে বিশ্রাম নেওয়া উচিত।
ধূমপান ও মদ্যপান
——————-
ধূমপানের নেশা ছাড়তে দিনক্ষণ ঠিক না করে, আজই, এ মুহূর্তে ছেড়ে দিন। অতিরিক্ত ধূমপান মস্তিষ্কের, তথা সারা দেহের ক্ষতি করে। আর যারা অ্যালকোহলে আসক্ত ভবিষ্যতে তাদের মস্তিষ্ক দিনে দিনে কার্যকারিতা হায়, হ্রাস পায় স্মৃতিশক্তি।
বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তার অভাব
———————-
যারা প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা শেষ করার পর বেকার হয়ে বসে থাকেন, অথবা বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ কম করেন, তাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য দ্রুত খারাপ হতে থাকে। এক পর্যায়ে সেখানে বাসা বাঁধে বিষণ্নতা ও আত্মবিশ্বাসের অভাব। তাছাড়া উপস্থিত বুদ্ধি কমে যায় এবং সব কিছু ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া
——————————-
মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার নেশা আছে অনেকেরই। আর যাদের অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার নেশা আছে তাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য খুব তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যায়।
বায়ু দূষণ ও শব্দ দূষণ
———————
বিশ্বজুড়ে বায়ু দূষণ এখন একটি প্রধান সমস্যা। আর এ দূষণের ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি দিক হলো মস্তিষ্কের ক্ষতি। বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান, কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ও অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। তাছাড়া মস্তিষ্কের বারোটা বাজানোর জন্য শব্দ দূষণের জুরি নেই। যারা অতিরিক্ত শব্দময় স্থানে দিনের অধিকাংশ সময় কাটান, তাদের মেধা ও মানসিকতা- দুয়েরই ক্ষতি হয়।

আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এই বিষয়গুলো মেনে চললে সবাই সুস্থ থাকবেন আশা করি। কেমন লেগেছে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!

মহাবিশ্বের শেষ সীমানাটা কোথায়? জানেন কি ? (MB Reza)

কেমন আছেন আপনারা? চলুন আজকে একটু বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করি।

আমাদের সবার মনের কোণায়ই কখনও না কখনও একটা প্রশ্ন উকিঝুঁকি মেরেছে যেটা হলো, আমরা যদি কখনও মহাবিশ্বের শেষ প্রান্তে পৌছাতে পারি তাহলে কি হবে? খাদের কিনারায় দাড়িয়ে যেভাবে আমরা মাথা ঝুকিয়ে নিচে কি আছে দেখার চেষ্টা করি সেভাবে যদি মাথা ঝুকিয়ে দাড়াই তাহলে আমাদের মাথাটা কোথায় থাকবে? তখন তো মাথাটা আর মহাবিশ্বের সীমানার মধ্যে নেই? আমরা কি খুঁজে পাবো মহাবিশ্ব ছাড়িয়ে?
উত্তরটা কিন্তু খুবই হতাশাজনক কারণ আমরা কখনই মহাবিশ্বের শেষ প্রান্তে পৌছাতে পারব না। এর কারনটা কিন্তু এই না যে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে, যদিও কথাটা সত্যি, কিন্তু আসল কারনটা হলো আমরা যদি মহাবিশ্বের বাইরের দিকে একটা সরলরেখা ধরে ক্রমাগত, বিরামহীণ ভাবে অনন্তকাল ধরে যেতেই থাকি তারপরও আমাদের পক্ষে কখনই মহাবিশ্বের শেষ সীমানায় পৌছানো সম্ভব হবে না। বরং আমরা যে জায়গা থেকে শুরু করেছিলাম সেখানেই আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে। আর ততক্ষণে হয়ত আমাদের আরেকবার চেষ্টা করার উৎসাহ আর থাকবে না।

কেন পৌছাতে পারব না? কারন হলো আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সুত্রের সাথে সামন্জস্য রেখে স্পেসটা অদ্ভুত ভাবে বাঁকানো বা মোচড়ানো। যেটা আমাদের পক্ষে সঠিকভাবে কল্পনা করা সম্ভব না। সহজ করে বলা যায় মহাবিশ্বটা বিশাল এবং নিরন্তর প্রসারিত হচ্ছে এমন কোনো বুদবুদের ভিতরে ভেসে বেড়াচ্ছে না। আমরা যখন বলি যে স্পেস প্রসারিত হচ্ছে আসলে সেটা ভুল। বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী এবং নোবেল পুরস্কার বিজয়ী স্টিভেন ওয়াইনবার্গের ভাষায়, ” সৌর জগৎ বা তারকালোক গুলো প্রসারিত হচ্ছে না এবং স্পেস নিজেও প্রসারিত হচ্ছে না বরং তারকালোকগুলো (গ্যালাক্সি) একে অপরের থেকে দুরে সরে যাচ্ছে।” মহাবিশ্বটা একই সাথে বাউন্ডলেস কিন্তু ফাইনাইট। এটা বোধগম্য করা আমদের ইনট্যুইশন বা অন্তর্জ্ঞানের জন্যে একটা বিশাল চ্যালেন্জ। জীববিজ্ঞানী জে.বি.এস হ্যালডেন মজা করে বলেছিলেন, ” মহাবিশ্বটা আসলে আমরা যতখানি ভাবি তার থেকেও বেশি অস্বাভাবিক বা যতখানি আমাদের ইমাজিন করার ক্ষমতা আছে তার থেকেও অনেক বেশি অস্বাভাবিক।”

স্পেসের বক্রতার ব্যাপারটা ব্যখ্যার জন্য একটা উদাহরণ ব্যবহার করা যেতে পারে। ধরুন এমন একজন লোক যে কিনা একটা সমতল পৃথিবীতে বাস করে এবং জীবনেও কখনও কোনো গোল জিনিষ দেখেনি। তাকে যদি আমাদের পৃথিবীতে এনে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং সে আমাদের পৃথিবীর শেষ সীমানায় পৌছানোর জন্য হাটা শুরু করে তবে সে কোনোদিনই তা খুঁজে পাবে না। সে হয়ত এক সময় যেখান থেকে শুরু করেছিলো সেখানেই আবার ফিরে আসবে। এই ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে তাকে কিংকর্তব্যবিমূড় করে ফেলবে। সে কিছুতেই বুঝতে পারবে না এটা কিভাবে সম্ভব। আমরাও হচ্ছি আরও উঁচু মাত্রার স্পেসের মধ্যে সেই সমতল-ভূমির হতবুদ্ধি মানুষের মত।

মহাবিশ্বের যেরকম কোনো স্হান নেই যেখানে আমরা দাড়িয়ে বলতে পারব এইটা হচ্ছে এর শেষ সীমা সেরকম কোনো কেন্দ্রও নাই যেখানে দাড়িয়ে আমরা বলতে পারব এইটাই সেই যায়গা যেখান থাকে সব কিছুর শুরু হয়েছিলো বা এটাই মহাবিশ্বের কেন্দ্রবিন্দু।
আমাদের জন্য মহাবিশ্বটা ততদূর লম্বা যতদূর পর্যন্ত আলো মহাবিশ্ব সৃষ্টির পর থেকে আজ পর্যন্ত পৌছাতে পেরেছে। এই দৃশ্যমান বিশ্ব, যেটা সম্পর্কে আমরা জানি বা যেটা নিয়ে কথা বলতে পারি, মিলিয়ন, মিলিয়ন, মিলিয়ন, মিলিয়ন (১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০) মাইল ব্যাপি বিস্তৃত।এর পরে আরও যা আছে সেটার হিসাব হয়ত সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা যাবে না
ফেসবুকে আমিঃ http://www.facebook.com/mb.reza.s

ঘুমের এক অজানা রহস্যময় জগত সম্পর্কে জানুন!

সবাইকে স্বাগতম। কেমন আছেন আপনারা ? 
আজকে আমার ব্লগে স্বাগতম জানাচ্ছি আরেকটি সায়েন্স ধর্মী আর্টিকেলে। এই আর্টিকেল বিষয় আমাদের চিরচেনা ঘুম সম্পর্কে। জানুন এখানে ঘুমের রহস্যময় জগত সম্পর্কে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

ঘুম চিরচেনা শান্তির পরশ। সেই জন্ম থেকেই ঘুমের সাথে আমরা পরিচিত। কিন্তু এই ঘুমের মধ্যেই আছে কিছু অজানা রহস্য। আছে অতি পরিচিত ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা।

যেমন, ধরুন আপনি আজ রাতে ঘুমাতে গেলেন। বাতি নিভালেন নরম বিছানায় গা এলিয়ে দিলেন, অল্প অল্প তন্দ্রা লেগে এলো হঠাৎ মনে হলো আপনি অনেক উচু থেকে নীচে পরে যাচ্ছেন। চমকে উঠলেন আপনি।

আবার, হয়তো একদিন আপনি আরামেই ঘুমিয়ে আছেন। হঠাৎ ঘুমটা একটু পাতলা হতে লাগলো আর আপনি দেখলেন আপনি নড়াচড়া করতে পারছেন না। মনে হচ্ছে কেউ আপনাকে চেপে ধরে আছে। আপনি প্রান পনে চিৎকার করতে চাইছেন কিন্তু গলা দিয়ে কোন স্বর বের হচ্ছে না। একটা আনগুলও নড়াতে পারছেন না আপনি। কিছুক্ষন পর ঘেমে নেয়ে উঠলেন আপনি । স্বাভাবিক হয়ে আসলো সবকিছু।

উপরের ঘটনা দুটি জীবনে ঘটেনি এমন মানুষ পাওয়া বিরল। তাছাড়াও ঘুমের মধ্যে কথা বলা, নাক ডাকা বা ঘুমের মধ্যে হাটা কোনটাই বিচিত্র নয়। এবার আসুন দেখে নেই কেন এমন হয়? কি বা তার সাম্ভাব্য প্রতিকার।
প্রথম ঘটনা, ঘুমের মধ্যে হঠাৎ মনে হওয়া যে উপর থেকে পরে যাচ্ছি।একে বলে Hypnic Jerk, আমরা যখন ঘুমিয়ে পরি আমাদের সারাশরীর আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে আসে মাংসপেশী গুলো শিথিল হয়ে আসে। কিন্তু যদি সে সময়ের মধ্যে আমাদের মষ্তিষ্ক ততটুকু বুঝতে না পারে তবে মষ্তিষ্ক একে উপর থেকে শরীর পরে যাচ্ছে এটা বলে ভুল করে সেক্ষেত্রে সে শরীর কে সে সময়ের জন্য প্রস্তুত করতে হাত-পা শক্ত করে ফেলে সেই আসন্ন বিপদ মোকাবেলা করার জন্য আর তাই আমরা ঝাকি দিয়ে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে উঠি। এটা আসলে সে সময় হয় যদি আমরা অনেকক্ষন ধরে ব্রেন কে রেস্ট না দেই একটানা পড়াশুনা বা অফিসের কাজ বা কোন গবেষনা এসব চিন্তা করতে করতে যদি ঘুমিয়ে পরি এবং আমাদের ঘুমের মধ্যেও যদি এসব চিন্তা চলতে থাকে তবে তখনই এ ঘটনা ঘটে।

২য় ঘটনা, বোবায় ধরার ঘটনার অনেকে কুসংস্কারের বশে বোবা ভুত ধরা বলে আসল নাম হচ্ছে Sleep Paralysis or Hypnagogic Paralysis, এ ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু জটিল আর তা হচ্ছে আমাদের ঘুমের ২ টা পর্যায় আছেঃ

১) REM (Rapid Eye movement)
২) NON REM ( Non Rapid Eye Movement)


ঘুমের মধ্যে এ দুটি চক্র পর্যার ক্রমে আসে আমরা যদি কোন ভাবে এর মাঝের সময়ে জেগে যাই আমরা হাত পা নাড়তে পারিনা। কথা বলতে পারিনা কারন আমাদের এই জেগে থাকা সম্পর্কে মষ্তিষ্ক অবগত থাকেনা। এ ক্ষেত্রে কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আমরা জেগে আছি জানতে পারলে আবার আমরা হাত পা স্বাভাবিক ভাবে নাড়তে পারি এবং জেগে উঠি এসময় কোন কিছু দেখা বা গন্ধ পাওয়া অস্বাভাবিক নয় কারন মষ্তিষ্ক তখন সপ্নের মত দৃশ্য তৈরী করতে পারে।

৩য় ঘটনা, ঘুমের ঘোরে হাটা বা Sleep Walking, ঘুমের ঘোরে হাটা ঘুমের NON REM পর্যায়ের খেলা। ঘুমের মধ্যে উঠে বসা হেটে বেড়ানো বাড়ীর বাহিরে চলে যাওয়া বা অনেক দূর পর্যন্ত ড্রাইভ করারও নজির আছে। বলা হয় ঘুমে হাটা ব্যাক্তিকে না জাগাতে কিন্তু এটা স্রেফ কুসংস্কার বরং যত তাড়াতাড়ি জাগানো যায় ততই ভালো।

৪র্থ ঘটনা, নাক ডাকা বা Snoring, নাক ডাকা অল্প বা হাল্কা কম বেশী সবারই হয়। কিন্তু কেন? ঘুমানোর সময় যখন আমাদের পেশী সমূহ শিথিল হয়ে আসে তখন আমাদের জিহ্বা বা গলবিলের পিছনের মাংসপেশীও শিথিল হয়ে আসে সে সময় তা আমাদের শ্বাসনালীর পথরোধ করে আর তাই নাক ডাকে। অল্প হলে ঠিকাছে কিন্তু যদি বেশী হয় এবং সে ব্যাক্তি ঘুমানোর পরও মনে করে যে ঘুম ভালো ভাবে হয়নি তবে সেটা ভয়াবহ স্লিপ এপনিয়া রোগের পূর্ব লক্ষন। এ রোগে সাধারনত মানুষ ঘুম থেকে দমবন্ধ হয়ে আসছে এই অভিজ্গতা নিয়ে হরবরিয়ে জেগে উঠে।এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিৎ।
যাহোক অনেক হলো এবার তবে শুভরত্রি। সবার সুন্দর পরিপূর্ন ঘুম হোক।
ফেসবুকে আমিঃ http://www.facebook.com/mb.reza.s

পেঁয়াজ কাটলে চোখ দিয়ে পানি পড়ে কেন?

পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে কান্নাকাটির অভিজ্ঞতা আমাদের সবারই কমবেশি আছে। চলুন দেখে নেয়া যাক কেন এমন হচ্ছে…
 পেঁয়াজে সালফারযুক্ত বিভিন্ন যৌগ থাকে, এর মধ্যে একটি হল amino acid sulfoxide। পেঁয়াজ কাটলে এর কোষের ভেতরের অ্যালিনেজ(allinase) এনজাইম বের হয়ে আসে যা amino acid sulfoxides গুলোকে উদ্বায়ী sulfenic acid এ পরিণত করে যা চোখের পানির সংস্পর্শে syn-propanethial-S-oxide নামক যৌগ তৈরী করে, এটিই চোখে পানি আনার জন্য দায়ী। সহজ কথায়, চোখের পানির সংস্পর্শে মৃদু সালফিউরিক এসিড তৈরী হয়, তাই চোখ জালাপোড়া করে।
এখানে উল্লেখ্য যে, irritation এর অনুভূতি কর্নিয়ার উপরে থাকা free nerve ending এর মাধ্যমে detected হয়, তারপর cilliary nerve দিয়ে বাহিত হয়ে parasympathe
tic nerves হয়ে lacrimal gland কে stimulate করে, ফলে চোখ থেকে পানি পড়ে।

ফেসবুকে আমিঃ http://www.facebook.com/mb.reza.s

বিটি বেগুনের শ্বেত পত্র

সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের Center for Culture-Centered Approach to Research and Evaluation সংক্ষেপে কেয়ার (CARE) থেকে বেগুনের উপর একটি শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়। বিস্তারিত পড়ুন :

বিটি বেগুনের শ্বেত পত্র
-দেলোয়ার জাহান
বেগুন বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের জনগণের সবজি জাতীয় খাদ্যের মধ্যে অন্যতম। বেগুনের অনেকগুলো জাতের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে চাষকৃত হাইব্রিড বেগুনে ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ হয়ে থাকে। পোকাটির আক্রমনে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মনপলি বাণিজ্যিক উৎপাদন কমিয়ে দেয়। পোকাটি প্রতিরোধে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানী মনস্যান্টোর প থেকে ভারতীয় কোম্পানী মাহিকো ব্যাকটেরিয়ার ব্যাসেলাস থুরেনজেনন্সিস (বিটি) জিন বেগুনে সংযুক্ত করে।
বিটি বেগুনে বিটি জিনের পাশাপাশি এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী মারর্কস
এসপিটিএলএল (markers, nptll ) এবং সিএএমভি ৩৫এস (CaMV35S) জিন যুক্ত করা হয় যেন সিআরওইয় বিটি জিন (cry1Ac) প্রকাশিত হয়। এই দুইটি মারর্ক জিন মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে দেহে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী করে তুলতে পারে। এছাড়াও বিটি বেগুনের পরাগরেণু অন্য বেগুন জাতে ও সমজাতীয় অন্য উদ্ভিদের ছড়িয়ে
পড়ে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে ফেলতে পারে। ২০১১ সালে ভারতীয় নবগঠিত জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্তৃপ (এনবিএ) বেগুন বীজের বায়োপাইরেসির অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৩ সালে কর্ণটক হাইকোট জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনে বিটি বেগুন তৈরি ও ৬ স্থানীয় জাতে বিটি জিন সংযোগের দায়ে মনস্যান্টো, মাহিকো ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা পুর্ণবহাল করে। ২০০৬ সালে মাহিকো বিটি বেগুনের ব্যাপকভাবে মাঠ গবেষণার জন্য ভারতীয় কর্তৃপরে কাছে অনুমোদের জন্য আবেদন করে। সে সময় ভারতের বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানায়। এবং দেশটির আদালত পরীক্ষা বাতিল করে। বিটি
বেগুন বাংলাদেশে ও ফিলিপাইনে সম্প্রসারণ করতে কোম্পানীগুলো দেশদুটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছে। তবে দেশ দু’টির বিভিন্ন সংগঠন বিটি বেগুনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি, জীববৈচিত্র্য হুমকি, খাদ্য নিরাপত্তার ও বীজের মালিকানা প্রশ্নে এই সম্প্রসারণের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।

পদার্থ ও প্রতি-পদার্থ, এবং রহস্যময় পদার্থবিজ্ঞান

বিজ্ঞান মানেই যুক্তিতর্ক, গবেষণা। আর গবেষণা মানেই রহস্য, সেই রহস্যের সমাধান, এবং তার চুলচেরা বিশ্লেষণ। আর বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সবচাইতে রহস্যময় বিজ্ঞান হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞান। পদার্থবিজ্ঞানের অনেক রহস্য আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
পদার্থবিজ্ঞানের যে বিষয়টি নিয়ে এখানে আলোচনা করা হচ্ছে, তা হল পদার্থ(Particle) এবং প্রতি-পদার্থ(Anti-Particle)। পদার্থবিজ্ঞানী পল ডিরাক ইলেক্ট্রনের জন্য কোয়ান্টাম মেকানিক্স ব্যবহার করতে গিয়ে সেখানে আইনস্টাইনের থিওরী অব রিলেটিভিটি ব্যবহার করে ১৯৩১ সালে সর্বপ্রথম ইলেক্ট্রনের প্রতি-পদার্থের অস্তিত্বের কথা ধারণা করেছিলেন। তিনি ইলেক্ট্রনের এ প্রতি-পদার্থের নাম দেন “পজিট্রন”। এবং এর পরের বছর ১৯৩২ সালে কার্ল এন্ডারসনপজিট্রন আবিষ্কার করেন, এবং পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করেন যে পল ডিরাকের অনুমানই সত্যি। ইলেক্ট্রন আর পজিট্রন পরস্পরের সংস্পর্শে আসা মাত্রই একে অপরকে ধ্বংস করে দেয় এবং তাদের সমস্ত ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে যায়। আর এই শক্তির পরিমাণ হচ্ছে E=mc^2।
আমরা জানি, আমাদের চারপাশের দৃশ্যমান জগৎ যা কিছু নিয়ে তৈরি, তার সবকিছুই সৃষ্টি হয়েছে ইলেক্ট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রন দিয়ে। ইলেক্ট্রনের প্রতি পদার্থ যেমন পজিট্রন, ঠিক তেমনি প্রোটন এবং নিউট্রনেরও প্রতি পদার্থ রয়েছে, যাদের নাম যথাক্রমে এন্টি-প্রোটন এবং এন্টি-নিউট্রন। উল্লেখ্য, ইলেক্ট্রন মৌলিক কণা হলেও প্রোটন আর নিউট্রন কিন্তু মৌলিক কণা নয়। বিগব্যাং নামক যে মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল, সেই বিস্ফোরণের ফলে ১২ টি মৌলিক কণা ও তাদের প্রতি-কণা সৃষ্টি হয়েছিল। এই কণাগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়- কোয়ার্ক এবং লেপ্টন। ইলেক্ট্রন হচ্ছে লেপ্টন শ্রেণীভুক্ত। আর প্রোটন তৈরি হয় দুইটি আপ কোয়ার্ক এবং একটি ডাউন কোয়ার্ক নিয়ে। আবার নিউট্র্ন তৈরি হয় একটি আপ কোয়ার্ক এবং দুইটি ডাউন কোয়ার্ক নিয়ে। সুতরাং আমাদের দৃশ্যমান জগৎ সৃষ্টি হয়েছে তিনটি মৌলিক কণিকা ইলেক্ট্রন, আপ কোয়ার্ক এবং ডাউন কোয়ার্ক নিয়ে।
কিন্তু এখানে একটা খটকা থেকেই যাচ্ছে! যদি বিগ ব্যাঙ এর সময় এই ১২ টি মৌলিক কণিকা এবং একই সাথে তাদের প্রতি-কণা সৃষ্টি হয়ে থাকে, তবে তো ইলেক্ট্রন, আপ কোয়ার্ক এবং ডাউন কোয়ার্কেরও অবশ্যই প্রতি-কণা রয়েছে। আর তাদের সমন্বয়ে পৃথিবীতে উপস্থিত প্রতিটি পদার্থেরই প্রতি-পদার্থ সৃষ্টি হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা জানি, পদার্থ এবং প্রতি পদার্থ পরস্পরের সংস্পর্শে আসা মাত্রই একে অপরকে ধ্বংস করে দিয়ে আইনস্টাইনের E=mc^2 সূত্র অনুযায়ী শক্তিতে পরিণত হবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি যে পৃথিবী এখনো দিব্যি টিকে আছে! তবে কী সেই প্রতি-পদার্থগুলো এমন কোথাও আছে, যেখান থেকে তারা পদার্থকে প্রভাবিত করতে পারছে না? আমরা সমগ্র বিশ্বের শতকরা মাত্র ৪ ভাগ সম্বন্ধে জানি, সেই ৪ ভাগ হচ্ছে আমাদের দৃশ্যমান জগৎ। আর বাকি ৯৬ ভাগই আমাদের অজানা! এই ৯৬ ভাগ আমাদের দৃশ্যমান জগতের বহির্ভূত এক অজানা জগৎ। হয়ত প্রতি-পদার্থগুলো সেই অজানা জগতেরই কোনো এক কোণে আত্মগোপন করে রয়েছে!
প্রতি-পদার্থগুলোকে দৃশ্যমান জগতের বাইরে পাঠিয়ে দিলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার কোনো কারণ নেই। কেননা পদার্থবিজ্ঞানের জগতে খটকা এমন এক জিনিস যাকে সাময়িকভাবে ভুলে থাকা গেলেও পুরোপুরি ফেলে দেয়া যায় না। ফেলে দিলেও পরিত্রাণ নেই, পথ চলতে হলে তাকে আবার কুড়িয়ে নিয়ে আসতে হবে। বিগ ব্যাং এর আগে পৃথিবীতে কোনো পদার্থ ছিল না, ছিল শুধু শক্তি। আর সেই শক্তি পুন্ঞ্জীভূত হতে হতে এক পর্যায়ে ঘটে মহাবিস্ফোরণ বিগ ব্যাং, এবং এর ফলে সমপরিমাণ পদার্থ ও প্রতি-পদার্থ সৃষ্টি হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সমপরিমাণ পদার্থ এবং প্রতি-পদার্থ যদি একই সঙ্গে সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাহলে তো সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথেই আবার পরস্পরকে ধ্বংস করে দিয়ে পুনরায় শক্তিতে পরিণত হওয়ার কথা[এখানে লক্ষণীয়, পৃথিবীর সকল পদার্থ ও প্রতি-পদার্থ পরস্পরের সংস্পর্শে এসে একে অপরকে ধ্বংস করে দেয়ার পর যে শক্তি উৎপন্ন হবে, তার সর্বমোট পরিমাণ হবে বিগ ব্যাং এর পূর্বে যে পরিমাণ শক্তি ছিল তার সমান]! কিন্তু পৃথিবী তো কোটি কোটি বছর ধরে টিকে আছে!! তবে কী প্রতি-পদার্থের তুলনায় পদার্থ বেশি পরিমাণে সৃষ্টি হয়েছিল? তারপর সব পদার্থ এবং প্রতি-পদার্থ পরস্পরকে ধ্বংস করে দেয়ার পর বাড়তি পদার্থগুলো পৃথিবীতে রয়ে গেছে?? নাকি সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতি-পদার্থগুলো কোনো এক অজানা জগতে চলে গেছে? কিন্তু কেন? কীভাবে??
সবকিছুর শেষে প্রশ্ন রয়েই যায়- কেন এবং কীভাবে?

Created by MB Reza

আমাদের ক্যাটাগরি

Pages

My photos

My photos

Followers